HomeLaw & Rules

বাংলাদেশে ভোক্তা অধিকার সুরক্ষা ও প্রতিকার

জাতীয় ভোক্তা-অধিকার আইন ২০০৯ এর ১৯ ধারা মতে, যে ব্যক্তি পুনঃবিক্রয় বা অন্য কোনও বাণিজ্যিক উদ্দেশ্য ব্যতিত সম্পূর্ণ বা আংশিক মূল্য পরিশোধ করে বা সম্পূর্ণ বাকিতে কোনও পণ্য বা সেবা ক্রয় করেন এবং যিনি আত্মকর্মসংস্থানের লক্ষ্যে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে কোনও পণ্য বা সেবা ক্রয় করেন তাকে ভোক্তা বলে। পণ্য বা সেবা ক্রয়কালে বা ক্রয় উত্তরকালে পণ্য বা সেবাটির উপর ভোক্তার যে অধিকার থাকে তাকে ভোক্তা-অধিকার বলা হয়।

দেশে প্রতিনিয়তই নকল পণ্য, ভেজাল পণ্য, মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য, অতিরিক্ত মূল্যে পণ্য বিক্রয়, মিথ্যা বিজ্ঞাপন, হোটেল-রেস্তোরাঁয় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বাসি খাবার পরিবেশনসহ ইত্যাদি ভাবে ক্ষুণ্ণ হচ্ছে ভোক্তা-অধিকার।

ভোক্তা-অধিকার আইন অনুযায়ী অপরাধগুলো হলো-

১. ধার্য্যকৃত মূল্যের চাইতে অধিক মূল্যে পণ্য বা সেবা বিক্রয় করা বা বিক্রয়ের জন্য প্রস্তাব বা পরিবেশন করা।

২.ভেজালমিশ্রিত বা নকল পণ্য বিক্রয় বা বিক্রয়ের জন্য প্রস্তাব বা পরিবেশন করা।

৩. স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নিষিদ্ধ দ্রব্য খাদ্যপণ্যের সঙ্গে মিশিয়ে বিক্রয় করা।

৪. মিথ্যা বিজ্ঞাপন দ্বারা ক্রেতাদের প্রতারিত করা।

৫. প্রতিশ্রুত পণ্য বা সেবা যথাযথভাবে বিক্রয় ও সরবরাহ না করা।

৬. ওজনের বাটখারা বা ওজন পরিমাপক যন্ত্রের মাধ্যমে পরিমাপে কারচুপি করা।

৭. পরিমাপের জন্য ব্যবহৃত দৈর্ঘ্য পরিমাপক ফিতা বা অন্য কিছুর মাধ্যমে পরিমাপে কারচুপি করা।

৮. নকল ওষুধ উৎপাদন ও মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রয় করা।

৯.আইনে নিষিদ্ধ কোনো কাজ করা যার ফলে সেবাগ্রহীতার জীবন বা নিরাপত্তা বিপন্ন হতে পারে।

১০. অবৈধ প্রক্রিয়ায় পণ্য উৎপাদন বা প্রক্রিয়াজাত করা

১১. হয়রানি, অবহেলা, দায়িত্বহীনতা ইত্যাদি দ্বারা সেবাগ্রহীতার অর্থ বা স্বাস্থ্যহানি ঘটানো।

১২. পণ্যের মোড়ক ব্যবহার না করা বা পণ্যের মোড়কের গায়ে খুচরা মূল্য, মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ লেখা না থাকা।

১৩. আইনগত বাধ্যবাধকতা অমান্য করে পণ্যের মূল্য তালিকা লটকিয়ে প্রদর্শন না করা।

১৪. আইনগত  বাধ্যবাধকতা অমান্য করে সেবার মূল্য তালিকা প্রদর্শন না করা।

কোনও এক বা একাধিক ভোক্তা, ভোক্তা-অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন, ব্যবসায়ী বা ভোক্তা অধিকার কর্মকর্তা ব্যক্তি যদি মনে করেন তার ভোক্তা-অধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে, তবে তিনি ভোক্তা-অধিকার লঙ্ঘনের তারিখ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বা তার কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত স্থানীয় কার্যালয়ে অভিযোগ দায়ের করতে পারবেন। ১৯৬০ সালের তামাদি আইনের ৬০ ধারা অনুযায়ী অভিযোগ দায়েরের ৯০ দিনের মধ্যে বিচার্য আদালতে মামলা দায়েয়ের জন্য অভিযোগপত্র দাখিল না করলে মামলা গ্রহণ করা হবে না।

নির্ধারিত ফরমে বা অন্য ভাবে লিখিত আকারে, ই-মেইল ফ্যাক্স বা অনলাইনে অভিযোগ করা যাবে। অভিযোগ দায়ের সময় পণ্য বা সেবা ক্রয়ের রশিদ সংযুক্ত করতে হবে।

অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হলে দণ্ডিত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান হতে আদায়কৃত জরিমানার ২৫% অভিযোগকারীকে তাৎক্ষণিক ভাবে প্রদান করা হবে।

ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পোর্টালেও অনলাইনে অভিযোগ দায়ের করা যাবে। ঠিকানা- http://dncrp.com/

ভোক্তা-অধিকার হটলাইন- ১৬১২১

অভিযোগ দায়ের করার ফরম- লিংক

*গ্রন্থনা– ওয়াজেদ নবী, এডিটর, জুরিস্টিকো ব্লগ 

 

আরো পড়ুন- আয়কর আইনজীবীর যোগ্যতা ও দায়দায়িত্ব

You cannot copy content of this page