সাবেক বিচারপতি আব্দুর রউফের জীবনাবসান
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপীল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি ও সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রউফ মারা গেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। আজ বোরবার (৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানী ঢাকার মগবাজার এলাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে সকাল ৯.৫০ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন তিনি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯১ বছর।
তাঁর একান্ত সহকারী মো. তাওহিদ গণমাধ্যমকে জানান, বিচারপতি আব্দুর রউফ আজ সকালে মগবাজার ইনসাফ বারাকা কিডনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
তিনি আরও জানান, “স্যার ২ মাস ধরে বেশ অসুস্থ ছিলেন, হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। একটু আগে হাসপাতালেই মারা গেছেন। পরিবারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঢাকার আনুষ্ঠানিকতাগুলো শেষ করে তাঁকে গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহে দাফন করা হবে।”
বিচারপতি আবদুর রউফের মৃত্যুতে বাংলাদেশ অন্তর্বতীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্ঠা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস শোক জ্ঞাপন করেছেন।
বিচারপতি আবদুর রউফের ছেলে মোহাম্মদ আরশাদুর রউফ বর্তমানে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিযুক্ত আছেন। তাঁর মৃত্যুতে অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের পক্ষ থেকে শোক জানানো হয়েছে।
বিচারপতি আব্দুর রউফ ১৯৩৪ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ময়মনসিংহ জেলায় জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি ১৯৫১ সালে মাধ্যমিক পাস করেন। আনন্দমোহন কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক এবং বিএসসি পাস করেন। পরবর্তীতে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে মাস্টার্স এবং এলএলবি ডিগ্রী লাভ করেন।
বিচারপতি আব্দুর রউফ ১৯৬২ সালে তৎকালীন ঢাকা হাইকোর্টে আইনজীবী হিসেবে তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন। এরপর ১৯৭০ সালে পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন।
১৯৮২ সালের ২৯ জানুয়ারি তিনি হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে নিযুক্ত হন। ১৯৯০ সালের ২৫ ডিসেম্বর প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিযুক্ত হন। তিনি ১৯৯৫ সালের ১৮ এপ্রিল প্রধান নির্বাচন কমিশনার পদ থেকে অব্যাহতি নিয়ে পুনরায় হাইকোর্ট বিভাগে বিচারক হিসেবে কাজ শুরু করেন এবং ১৯৯৫ সালের জুন মাসে আপীল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে নিযুক্ত হন। তিনি ১ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৯ সালে অবসর গ্রহণ করেন।
এছাড়াও জাতীয় শিশু-কিশোর সংগঠন ‘ফুলকুঁড়ি আসর’-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি এবং হামদর্দ ল্যাবরেটরীজ (ওয়াক্ফ) বাংলাদেশ এর বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
১৯৯১ সালে তাঁর কমিশনের আয়োজনে ১৯৯১ সালের জাতীয় নির্বাচন প্রশংসিত হলেও মাগুরা উপ-নির্বাচন বিতর্কের জন্ম দিয়েছিল।
বিচারপতি আবদুর রউফ ২ ছেলে ও ১ মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।